হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী—দেশের হাওজা-ই-ইলমিয়ার পরিচালক আয়াতুল্লাহ্ আলিরেজা আ'রাফি, জাতীয় সম্মেলন “ইসলামী আন্দোলনের প্রবর্তকরা: আয়াতুল্লাহ্ ইয়াজদী (রহ.)”-এর প্রস্তুতি কমিটির সদস্যদের সাথে সাক্ষাতে, নতুন পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে হাওজা-ই-ইলমিয়ার সামনে থাকা প্রয়োজনগুলো তুলে ধরেন এবং তরুণ শিক্ষার্থীদের জন্য প্রেরণাদায়ক ব্যক্তিত্বদের পুনঃপাঠ, পরিচয় নির্মাণ এবং অনুপ্রেরণা সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আজকের পরিস্থিতি: রুহানিয়্যাত ও মারজায়েত জটিল চ্যালেঞ্জের মুখে
হাওজা-ই-ইলমিয়ার পরিচালক বলেন: আজ রুহানিয়্যাত ও মারজায়েত প্রতিষ্ঠান কঠিন ও জটিল ঢেউয়ের সম্মুখীন।
তিনি আরো বলেন, যেমন আমি মরহুম মির্জা নায়েনী (রহ.)-এর কংগ্রেসে উল্লেখ করেছি—ইসলামী বিপ্লবের বরকতে বহু শক্তি ও সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, তবে একই সাথে কিছু চ্যালেঞ্জও সামনে এসেছে।
প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের প্রতি মনোযোগের প্রয়োজন
প্রযুক্তির অগ্রগতির গুরুত্বের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন: দ্বাদশ বছরের বেশি সময় ধরে আমি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ও জ্ঞান-বিজ্ঞান (Cognitive Science) নিয়ে গবেষণা করছি। এই ক্ষেত্রগুলো শুধু একটা টুল নয়—বরং জ্ঞানতাত্ত্বিক কাঠামোকে প্রভাবিতকারী সক্রিয় উপাদান। হওযাকে এসব ক্ষেত্রের সঙ্গে জ্ঞানভিত্তিক ও সময়োপযোগী মোকাবিলার প্রস্তুতি নিতে হবে।
তরুণ শিক্ষার্থীদের জন্য আদর্শ নির্মাণ জরুরি
আয়াতুল্লাহ্ আ'রাফি বলেন: তরুণ আলেমদের জন্য প্রকৃত শিখর-ব্যক্তিত্ব ও আদর্শ তুলে ধরা অত্যন্ত প্রয়োজন।
তিনি যোগ করেন: বৈজ্ঞানিক সম্মেলনগুলো কেবল শ্রদ্ধা নিবেদন নয়—বরং এগুলো হওয়া উচিত পরিচয়-নির্মাণ, আদর্শ-স্থাপন এবং হওযার তরুণ মানবসম্পদকে শক্তিশালী করার মাধ্যম। আমাদের তরুণদের দেখাতে হবে—যে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে উচ্চ বৈজ্ঞানিক ও আধ্যাত্মিক মর্যাদায় পৌঁছানো সম্ভব। এটি আজকের হওযার মূল প্রয়োজন—অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের এমনভাবে গড়ে তোলা যাতে তারা জ্ঞানগত ও সামাজিক ঝড়ের সামনে দৃঢ় থাকতে পারে এবং নতুন পরিস্থিতির সাথে নিজেদের মানিয়ে নিতে সক্ষম হয়।
আয়াতুল্লাহ্ ইয়াজদী (রহ.)-এর অধিকার এখনো পূরণ হয়নি
তিনি বলেন: আয়াতুল্লাহ্ ইয়াজদী (রহ.) বিস্তৃত, বিপ্লবী, আধ্যাত্মিক এবং দক্ষ ব্যবস্থাপনাসম্পন্ন এক পূর্ণাঙ্গ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তাঁর ব্যক্তিত্বের প্রতিটি দিক অত্যন্ত উজ্জ্বল। আমার বিশ্বাস—হওযা ও ইসলামি শাসনব্যবস্থা এখনো মরহুম ইয়াজদীর প্রকৃত অধিকার আদায় করতে পারেনি। এ ধরনের ব্যক্তিত্বকে বারবার তুলে ধরা যত বাড়বে, ততই তা মূল্যবান হবে এবং কোনোভাবেই একটি মাত্র সম্মেলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়।
মারাজে ও বরেণ্য আলেমদের দিকনির্দেশনার গুরুত্ব
হাওজা-ই-ইলমিয়ার পরিচালক আরো বলেন: মারাজে-এ-তাকলিদের দিকনির্দেশনা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। তাঁদের বার্তা বা মতামত কেবল সমর্থনসূচক নয়—বরং হওযার সামগ্রিক পথরেখার প্রতি তাঁদের মনোযোগ ও তত্ত্বাবধানের পরিচয়। এই সমর্থন সম্মেলনের বৈজ্ঞানিক গ্রহণযোগ্যতাকে বাড়িয়ে দেয় এবং আয়োজকদের পথচলাকে আরও শক্তিশালী ও সুসংহত করে। তাই মারাজে-এ-উজামার বার্তা সংগ্রহ ও প্রকাশ করতে পারলে সম্মেলনের প্রভাব বহুগুণ বেড়ে যাবে।
ব্যাপক গণমাধ্যম কাভারেজের প্রয়োজন
আয়াতুল্লাহ্ আ'রাফি বলেন: সম্মেলনের দিন হওযার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এর কার্যক্রম সম্প্রচার করা উচিত। পাশাপাশি সংবাদ সংস্থা ও অনলাইন টেলিভিশনগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে এর বিষয়বস্তু ও অর্জনসমূহ ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে।
আপনার কমেন্ট